বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাজ ও রাজনীতির দর্শন একসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতিজনরা৷
তারা বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধুর দর্শনের মূলে ছিল বাঙালি জাতিসত্তা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধ৷
বুধবার (৮ মে) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মদিন উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন৷
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খানের সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহ্ আজম।
এ বছর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’।
এ প্রতিপাদ্যে স্মারক বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, বাঙালির গৌরবের দুই শীর্ষবিন্দু রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এক অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাঁর কাছাকাছি বোধ হয় আর কেউ যেতে সক্ষম হবেন না। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, চিত্রকলা- যেখানেই তিনি হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনার ফসল ফলেছে।
অন্যদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার কাদা-মাটি থেকে উঠে আসা এক নেতা। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যে তিনি স্নাত। বাঙালির যে দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রসাধনা, তার বাস্তব রূপ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালিকে পৌঁছে দিয়েছেন স্বাধীনতার স্বর্ণদ্বারে।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সব সময় সামাজিক অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অন্যদিকে তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক৷ লেখনীর মাধ্যমে তিনি বাংলার সবুজ শ্যামল প্রকৃতিকে তুলে ধরেছেন৷ আনন্দ, বিরহে, সংকটে রবীন্দ্রনাথের কাছে আমাদের আশ্রয় নিতে হয়৷ নারীর সমঅধিকারের বিষয়েও তিনি সোচ্চার হয়েছিলেন৷ নতুন প্রজন্মও বারবার তার কাছে ফিরে আসবে, কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বাস করতেন এ প্রকৃতি ও মানুষে সত্য ও সুন্দর বিরাজ করে৷
বুধবারের অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর প্রদীপ প্রজ্বালন ও সদ্য প্রয়াত শিল্পী সাদী মুহম্মদকে স্মরণ করা হয় যন্ত্রসংগীতের মাধ্যমে৷
উদ্বোধন পর্বের পরে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর আয়োজনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু হয় সমবেত সংগীত ‘হে নতুন দেখা দিল আর বার’ পরিবেশনার মাধ্যমে। পরিবেশন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এরপর আবারও সমবেত সংগীত ‘ঐ মহামানব’; পরিবেশন করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বকবির ‘বাঁশি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন৷
পরে সমবেত সংগীত ‘ও আমার দেশের মাটি’ পরিবেশন করবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়৷ এরপর ‘হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে’ গানের সঙ্গে নৃত্যনাট্য পরিবেশন করবেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির শিশুশিল্পীরা৷
পরে গান ও কবিতা পরিবেশন করবেন সামিউল ইসলাম পুলক এবং মাহনাজ করিম হোসেন।
এরপর একক সংগীত পরিবেশন করবেন বরেণ্য শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
‘রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্গবন্ধু’ নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যদল।
আপনার মতামত লিখুন :