বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে পুরো দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। ব্যাহত হয় পণ্য পরিবহন। সরবরাহ সংকটের প্রভাব পড়ে বাজারে। ধীরে ধীরে সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে নিত্যপণ্য নিয়ে অস্বস্তি এখনো কাটেনি। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। চালেও ফেরেনি স্বস্তি।
অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামে খুব বেশি হেরফের না হলেও বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও চালের দাম কমেনি। আন্দোলনের সময় চালের দাম কেজিপ্রতি ২-৪ টাকা বেড়েছিল, এখনো তেমনই রয়েছে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। যা আগে চেয়ে ১০ টাকা বেশি৷ তবে ভারত থেকে আমদানি করা কিছু পেঁয়াজ এখনো ১০০ থেকে ১১০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। যদিও ভারতীয় পেঁয়াজের মান দেশি পেঁয়াজের চেয়ে কিছুটা নিম্ন।
ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের চড়া দাম এখনো একই অবস্থায় রয়েছে। বাজারে মিনিকেট ৭০ থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা ৭৫, পাইজাম ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের চেয়ে ৪ থেকে ৫ টাকা বাড়তি। মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়।
সেগুনবাগিচা শিমুল রাইস এজেন্সির জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের সময় পরিবহন বন্ধ থাকায় মোকামে প্রতি বস্তায় চালের দাম ২০০ টাকা বেড়েছে। এরপর তা এখনো কমেনি।
প্রধান এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ায় সীমিত আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। সবচেয়ে বেশি নাজেহাল দরিদ্র মানুষেরা। লোকমান হোসেন নামের একজন ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমেছে, ডিম-মুরগিরও কমেছে। কিন্তু চালের দাম কমেনা। আসলে সিন্ডিকেট করে একবার দাম বাড়ালে আর কমানো হয় না।
ছোট ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা তথা মিল ও পাইকারি পর্যায়ে তদারকি করলে জিনিসপত্রের দাম কমতে পারে।
রামপুরা বাজারের চাল বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, এখন পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক। পণ্য আনা-নেওয়ায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবু কোনো কারণ ছাড়াই মিলাররা চালের দর বাড়িয়েছেন। সরকার মিলগুলোতে তদারকি করলে দাম কমে আসবে।
চাল-পেঁয়াজে অস্বস্তি থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমছে। সর্বনিম্ন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁপে, ১৫-২০ দিন আগে পেঁপের কেজি ছিল ৭০ টাকা। একইভাবে পটল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। এতদিন এসব সবজির দাম ছিল ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা দেখা গেছে বরবটি, বেগুন ও শসার কেজি। সপ্তাহ তিনেক আগেও এসব সবজির কেজি ১৫০ টাকা ছুঁয়েছিল। কাঁচা মরিচের কেজি কোথাও ২০০ আবার কোথাও ২৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ইলিশ মাছের ভরা মৌসুম চলছে এখন। ফলে দাম অনেক কম থাকার কথা। কিন্তু সে তুলনায় কমেনি ইলিশের দাম। যদিও বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনতে ক্রেতাদের এখন গুনতে হচ্ছে কমবেশি দেড় হাজার টাকা। এছাড়া আধা কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়।
আপনার মতামত লিখুন :