ঢাকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

উচ্চশিক্ষায় প্রয়োজন যে ডকুমেন্টস

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৪

উচ্চশিক্ষায় প্রয়োজন যে ডকুমেন্টস

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন সুব্রত ব্যানার্জি। তবে বর্তমানে তিনি শিক্ষা ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি গবেষণা করছেন। এর আগে ক্রিমিনোলজি বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেছেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়া থেকে। বিদেশে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নেওয়া এ দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস


পাসপোর্ট: অবশ্যই মেয়াদসহ পাসপোর্ট লাগবে। পাসপোর্ট না থাকলে আবেদন করা যাবে না।
অ্যাকাডেমিক সনদ: ব্যাচেলর ও মাস্টার্সের (যদি করা থাকে) একাডেমিক সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্টের স্ক্যান কপি পিডিএফ ও JPG দুই ফরম্যাটেই সংরক্ষণ করুন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃক মুখবন্ধ খামে যাচাই করা সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট পাঠাতে হতে পারে (ডাকযোগে)। আবেদনের সময় সেই ডকুমেন্টস চেক করিয়ে নিতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে।
ইংরেজিতে দক্ষতা: নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তিসহ সুযোগ পেতে হলে অবশ্যই ইংরেজি ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর ও (বিষয় ও দেশভেদে IELTS, GRE, TOEFL যেকোনো একটি বা দুটি লাগতে পারে) সনদের প্রয়োজন হবে। আবেদনের আগে স্কোর হাতে ও সনদ স্ক্যান করে রাখুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন ইংরেজিতে হলে রেজিস্ট্রার অফিসে আবেদন করে একাডেমিক শাখা থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে রাখুন।
রিসার্চ প্রপোজাল: পিএইচডির আবেদনের জন্য অবশ্যই প্রফেসরদের ই-মেইল লেখার আগেই গবেষণা প্রস্তাবনা বা রিসার্চ প্রপোজাল প্রস্তুত করুন। দেশভেদে গবেষণা প্রস্তাবনা ১ থেকে ২ হাজার শব্দের হয়ে থাকে। তবে কানাডা বা আমেরিকায় থিসিস মাস্টার্সেও আবেদন করার জন্য রিসার্চ প্রপোজাল লাগতে পারে। পিএইচডির ক্ষেত্রে যেকোনো দেশে আবেদনের জন্য অবশ্যই আপনার পাবলিকেশন বা পূর্ববর্তী গবেষণার সঙ্গে মিল রেখে প্রপোজাল প্রস্তুত রাখা জরুরি। পিএইচডির আবেদনে সুপারভাইজার পাওয়ার ক্ষেত্রে রিসার্চ প্রপোজাল খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্টেটমেন্ট অব পারপাস: স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) এক হাজার শব্দের মধ্যে লিখে রাখুন। অনেক জায়গায় আবার মোটিভেশন লেটার চাইতে পারে। তবে স্টেটমেন্ট অব পারপাস ও মোটিভেশন লেটার–এই দুটি বিষয়ের ভেতর খুব বেশি পার্থক্য নেই।
সিভি: একটি ভালো মানের সিভি খুবই জরুরি। আপনার সব যোগ্যতা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবে সেই সিভি। তবে মনে রাখতে হবে, চাকরির সিভি ও উচ্চশিক্ষার বা অ্যাকাডেমিক সিভি আলাদা। একাডেমিক সিভিতে আপনার গবেষণা, প্রকাশনা ও একাডেমিক কাজ অন্তর্ভুক্ত করুন।
ডকুমেন্টস সংরক্ষণ: আপনার সব প্রকাশনা স্ক্যান করে পিডিএফ বানিয়ে রাখতে পারেন। আবেদনের সময় যেকোনো একটি নমুনা হিসেবে সাবমিট করতে হতে পারে। আর পিএইচডির ক্ষেত্রে মাস্টার্সের থিসিসের ইলেকট্রনিক কপি দেখতে চাইতে পারে বা অ্যাবস্ট্রাকটসহ কয়েক পেজ সাবমিট করতে হতে পারে। তা ছাড়া কোনো কনফারেন্স, সেমিনারে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করলে সার্টিফিকেট বা অ্যাবস্ট্রাকট প্রকাশনা স্ক্যান করে রাখুন, সেটিও কাজে লাগতে পারে।
অভিজ্ঞতাপত্র: আগে কর্মরত বা বর্তমান কর্মস্থল থেকে কাজের অভিজ্ঞতার সনদ নিয়ে রাখুন। কেউ শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় ফিল্ড ইনভেস্টিগেটর বা রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে থাকলে সনদ বা অভিজ্ঞতাপত্র নিয়ে রাখুন। এই ডকুমেন্টস যে আবেদনে অবশ্যই লাগবে তা নয়, তবে অনেক ক্ষেত্রে লাগতে পারে।
একাডেমিক অর্জন অন্তর্ভুক্তকরণ: শিক্ষাজীবনে কোনো একাডেমিক অর্জন থাকলে (ডিনস অ্যাওয়ার্ড, গোল্ড মেডেল, প্রধানমন্ত্রী পদক বা একাডেমিক কোনো সাফল্য) সিভিতে উল্লেখ করুন এবং যথাযথ সার্টিফিকেট সংগ্রহে রাখুন। ফল ভালো থাকলে সিভিতে অবস্থান ও সিজিপিএ অথবা পার্সেন্টেজ অবশ্যই উল্লেখ করুন।
রেকমেন্ডেশন লেটার: মাস্টার্স বা পিএইচডির আবেদনে দুই থেকে তিনজন অধ্যাপকের সুপারিশপত্র বা রেকমেন্ডেশন লেটার অবশ্যই লাগবে। আজই চিন্তা করুন যেকোন শিক্ষক বা চাকরির ক্ষেত্রে কাকে নির্বাচন করবেন রেকমেন্ডেশন লেটার দেওয়ার জন্য। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনার ব্যাচেলর বা মাস্টার্সের শিক্ষকের কাছ থেকে রেকমেন্ডেশন লেটার চাওয়া হয়। আপনি চাইলেই যেকোনো শিক্ষকের নাম দিতে পারবেন না। শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে আপনার ব্যাচেলর বা মাস্টার্সের রিসার্চ পেপার বা থিসিসের সুপারভাইজারের রেকমেন্ডেশন লেটার চাওয়া হয়। আপনি চাইলে নিজের সুপারভাইজারের পাশাপাশি অন্য কোর্স টিচারের নামও দিতে পারেন। তাই আবেদনের ছয় মাস আগে থেকেই আপনি তাঁদের জানিয়ে রাখুন যে উচ্চশিক্ষার আবেদনের জন্য আপনার ভবিষ্যতে পরিকল্পনা রয়েছে। আপনার সিভিতেও তাঁদের নাম থাকা জরুরি। সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে ভর্তি ও বৃত্তি অর্জনের ক্ষেত্রে রেকমেন্ডেশন লেটারেও নম্বর বিদ্যমান।
অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!