ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিশ্বে জন্মহার কমবে, জনসংখ্যার চাপ বাড়বে নিম্ন আয়ের দেশে

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৪

বিশ্বে জন্মহার কমবে, জনসংখ্যার চাপ বাড়বে নিম্ন আয়ের দেশে

বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে জন্মহার এত কমছে যে শতাব্দীর শেষ নাগাদ পৃথিবীতে প্রয়োজনীয় জনসংখ্যার ঘাটতি দেখা যেতে পারে। তবে দরিদ্র দেশগুলোতে বেশিরভাগ জীবিত শিশুর জন্ম হবে। এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য দিয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) জ্যেষ্ঠ গবেষক স্টেইন এমিল ভলসেট এক বিবৃতিতে বলেন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জন্য বেশি সংবেদনশীল নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে জন্মহার অত্যধিক বেড়ে যাবে।


স্বাস্থ্য ও জনমিতি বিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে গতকাল বুধবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষণা অনুসারে, ২০৫০ সাল নাগাদ ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৫৫টি দেশেই জন্মহার কমে যাবে। অর্থাৎ প্রায় ৭৬ শতাংশ দেশেই জনসংখ্যার স্তর বজায় রাখার মতো শিশু জন্মাবে না। ২১০০ সাল নাগাদ প্রায় ৯৭ শতাংশ অর্থাৎ ১৯৮টি দেশেই জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।


গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ, ইনজুরি অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টরস স্টাডির অংশ হিসেবে ১৯৫০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংগৃহীত জরিপ, আদমশুমারি এবং অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণায় এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গবেষকেরা বলছেন, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ তিন–চতুর্থাংশেরও বেশি জীবিত শিশু জন্ম নেবে নিম্ন ও নিম্ন–মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এ শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি জন্মাবে সাব–সাহারান আফ্রিকায়।

ডেটা বলছে, ১৯৫০ সালে গড়ে প্রতি নারী পাঁচটি সন্তান জন্ম দিত। ২০২১ সালে জন্মহার কমে গড়ে প্রতি নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার সংখ্যা ২ দশমিক ২ এ নেমে আসে। একই বছরে ১১০টি দেশেই জনসংখ্যার স্তর বজায় রাখার মতো জন্মহার ছিল না, অর্থাৎ প্রতিটি নারী ২ দশমিক ১ টিরও কম শিশু জন্ম দিয়েছে।

গবেষণায় দক্ষিণ কোরিয়া এবং সার্বিয়ার মতো দেশগুলোর জন্য বিশেষত উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরা হয়েছে। এ দেশগুলোতে প্রজনন হার প্রতি নারী ১ দশমিক ১ সন্তানেরও কম। এ কারণে তারা ক্রমহ্রাসমান শ্রমশক্তির চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।

ভলসেট বলছেন, সীমিত সম্পদ বিশিষ্ট দেশগুলো দ্রুততম বর্ধনশীল জনসংখ্যাকে কিভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল, তাপ–চাপযুক্ত এবং ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিশিষ্ট স্থানে সহায়তা করা যায় তা নিয়ে হিমশিম খাবে।

উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে জন্মহার কমে যাওয়া নারীদের ক্রমবর্ধনশীল শিক্ষা ও চাকরির সুযোগকে প্রতিফলিত করে। গবেষকেরা বলছেন, অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও নারী শিক্ষা ও আধুনিক জন্ম নিরোধক ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া উচিত।

গবেষণা প্রতিবেদনের সহ–লেখক ও আইএইচএমই এর সদস্য নাতালিয়া ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে বলেন, ‘একবার প্রায় প্রতিটি দেশের জনসংখ্যা সংকুচিত হয়ে গেলে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে উন্মুক্ত অভিবাসনের ওপর নির্ভরতা প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে।’

এই প্রতিবেদনে অতীতের বিশেষ করে ২০২০–২১ সালের করোনা মহামারির সময়ের তথ্যের পরিমাণ ও গুণমান সীমাবদ্ধ ছিল বলে স্বীকার করেন লেখকেরা।

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!