ঢাকা রবিবার, ১১ মে, ২০২৫

ইরান-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় যুক্তরাষ্ট্রের গাত্রদাহ

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৪

ইরান-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতায় যুক্তরাষ্ট্রের গাত্রদাহ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বরাবরই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে পাকিস্তান। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আমল থেকে পাকিস্তানিদের মধ্যে মার্কিন প্রীতিতে বেশ ভাটা পড়তে দেখা যায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে। যে ইরান বহু বছর ধরেই মার্কিনীদের মাথাব্যথার কারণ। ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের এমন দহরম-মহরম দেখে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালা শুরু হয়েছে। আর তাই ইরানি প্রেসিডেন্টের পাকিস্তান সফরকালেই ইসলামাবাদকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। 

তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে রয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার এই সফরের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। তবে রাইসি পাকিস্তানে সফরে থাকাকালীনই ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে গেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটি। পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজে মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার পাকিস্তানকে ইরানের প্রেসিডেন্টের সফর ও ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে এক বিবৃতিতে বলেন, কেউ যদি ইরানের সঙ্গে কোনো প্রকার বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী হয়, সে ক্ষেত্রে এ সম্পর্কিত  কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।

পরবর্তীতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইসলামাবাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করার সময় ওই মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু পাকিস্তানের বৃহত্তম রফতানি বাজারই নয়, বরং দেশটির অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। তিনি আরও বলেন, গত ২০ বছর ধরে আমরা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। তাই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সাফল্য এক অর্থে আমাদেরও সাফল্য এবং আমরা এই অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখতে চাই।

এমন একসময় যুক্তরাষ্ট্রের এই সতর্কবার্তা এলো, যখন অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল পাকিস্তান বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সহায়তার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং এ ক্ষেত্রে বড় সম্ভাবনা হয়ে এসেছে ইরান।

তবে এই সতর্কবার্তা সত্ত্বেও ইতিমধ্যে তেহরান এবং ইসলামাবাদ দুই দেশ বাণিজ্য, প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি এবং বিচারিক বিষয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মোট আটটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক-পরবর্তী এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট জানান যে, পাকিস্তান ও ইরান উভয়েই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করতে সম্মত হয়েছে। ইব্রাহিম রাইসি ইরানে ফিরে যাওয়ার আগে আরও কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান সবসময়ই ইরানকে ভাতৃসুলভ দেশ বলে মনে করে। চলতি বছরের জানুয়ারির দিকে প্রতিবেশী এ দুদেশ দ্বন্দ্বে জড়ালেও শিগগিরই তা মীমাংসা করে নেয়। ওই সময় দুই প্রতিবেশী দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও ঘটেছিল।

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!