সোশ্যাল মিডিয়ায় নাম সর্বস্ব অ্যাপ বানিয়ে নতুন করে এদেশের মানুষকে প্রতারিত ও নিঃস্ব বানানোর ফাঁদ পেতেছেন রংপুরের প্রতারক রাশেকুল ইসলাম। ২০২২ সালে শুধুমাত্র একটি ই ট্রেড লাইসেন্স এর উপর ভিত্তি করে প্রতারণার সূক্ষ্ম জাল বিছিয়ে মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন ফ্রেন্ডস গোলের মালিক প্রতারক রাসেকুল ইসলাম।
আমাদের দেশে ইতিমধ্যে ইভ্যালি, ডেসটিনি, যুবকের মত কয়েকটি হাজার কোটি টাকার প্রতারণার ঘটনা ঘটার পরেও এ ধরনের নতুন প্রতারণার ফাঁদ কিভাবে তৈরি হলো তা সকলের বোধগম্যতার বাইরে। এই অ্যাপের মাধ্যমে মানুষকে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে যার কোন ভিত্তি নেই। আর এই ধরনের অবাস্তব স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য দিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় দুইশত মানুষের কাছ থেকে ডাইরেক্টরশীপের নাম করে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক রাসেকুল ইসলাম। এই বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান তারা ইতিমধ্যে এখানে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখন পর্যন্ত তারা এখান থেকে কোন সুফল নিতে পারেননি,শুধু স্বপ্ন দেখে চলেছেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এই প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র একটি ভাড়া অফিস ছাড়া আর কোন স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি নেই। টাকা নেওয়ার সময় এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের সাথে যে চুক্তি করে সেখানে টাকার বিপরীতে প্রতি মাসে গ্রাহককে বড় অংকের একটি অনারিয়াম দেওয়ার বিষয় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে যা কয়েকগুণ বেড়ে কোটি কোটি টাকা হবে বলে স্বপ্ন দেখানো হয়। কিন্তু সরে জমিনে দেখা যায় এই মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানটির তেমন কোন উপার্জন নাই।
শুধুমাত্র অলীক স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রতারক রাসেকুল ইসলাম কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সূত্রমতে জানা যায় অনেকে মিথ্যা আশ্বাসকে সত্য মনে করে নিজের সঞ্চিত অর্থ,এমনকি জায়গা জমি বিক্রি করে এখানে অর্থ লগ্নী করছেন।
এ বিষয়ে রাশেকুল ইসলামের মুখোমুখি হলে তিনি প্রতিবেদককে একটি মাত্র ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোন কিছু দেখাতে পারেননি। যেহেতু এটি একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ বলে তিনি দাবি করছেন সেহেতু এখানে অনেক মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদানের একটা হিসাব থেকে যায়। এক্ষেত্রে এই অ্যাপটি মানুষের তথ্যসম্বলিত বিষয়ে কতটুকু সুরক্ষিত সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এছাড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের অ্যাপ পরিচালনার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, বিটিসিএল এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের কোনরকম কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। একই সাথে প্রতিবেদকের কাছে অলীক স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার বিষয়ে সরল স্বীকারোক্তি প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী একাধিক মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত পেতে ইতিমধ্যে আইনের আশ্রয় নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা যায়।
এ ধরনের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে দেশের মানুষ আবারও ইভ্যালি, ডেসটিনি বা যুবকের মত হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারণার শিকার হবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
আপনার মতামত লিখুন :