মিয়ানমারের সীমান্তের ওপারে মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দে কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের সীমান্ত এলাকা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) টেকনাফের সীমান্ত এলাকার লোকজন ঘুমাতে না পারলেও শুক্রবার সকাল থেকে পরিস্থিত শান্ত রয়েছে। তবে নাফ নদীতে অবস্থানরত মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সীমান্তের লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত ৩ পর্যন্ত থেমে থেমে রাখাইন রাজ্যে মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড কম্পনের সৃষ্টি হয়। ফলে এসব সীমান্ত এলাকার মানুষ রাতভর ঘুমাতে পারেননি। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আর কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি।
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, ১০৫ দিন ধরে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি মংডু টাউনশিপের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দুটি শহরসহ, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪টি সীমান্ত চৌকি, রাচিডং-বুচিডং টাউনশিপের বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন মংডু দখলের জন্য লড়ছে তারা।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, গত বুধবার রাত থেকে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে তা শোনা যাচ্ছে না। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে একটি বড় জাহাজ অবস্থান করায় আপাতত এ নৌপথ দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটাতে হচ্ছে। ওপারের কিছু কিছু এলাকা থেকে আগুনের ধোঁয়া উড়তেও দেখা গেছে। বিস্ফোরণের শব্দের সঙ্গে সঙ্গে কম্পন সৃষ্টি হয়। এতে ঘুমনোও যায় না।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম জানান, গত বুধবার রাত থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৩টা পর্যন্ত থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিন্তু শুক্রবার ভোর থেকে আর কোনো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :