ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দেশের ৫৯ জেলার ১৩৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কেন্দ্রে আসেন ভোটাররা। পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন তারা।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় এ পর্বে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে দুই কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ। প্রায় সব উপজেলায় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ১৩৯টি উপজেলা পরিষদে প্রতিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় ১৬শ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ইসি জানায়, নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএম এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোট হচ্ছে। এ ধাপে মোট এক হাজার ৬৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬২৫ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৪০ জন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ করে অর্থাৎ মোট ২৮ প্রার্থী এরই মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
এদিকে, যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকায় পার্বত্য জেলা বান্দরবানের তিন উপজেলায় নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি।
ইসি আরও জানায়, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ কেন্দ্র বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করেছে ইসি। সে হিসেবে সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৮/১৯ সদস্য এবং দুর্গম এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০/২১ সদস্য মোতায়েন করেছে ইসি। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় দু থেকে চার প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে।
উপকূলীয় এলাকার দ্বীপাঞ্চলে কোস্টগার্ড মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ভোটারদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটের আগের দুদিন, ভোটের দিন এবং ভোটের পরে দুদিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবে।
ভোটারের নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছে ১৪ হাজার ৬১০ বিজিবি সদস্য, ৪১ হাজার ৫৩০ পুলিশ সদস্য ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ও পুলিশের ১১ হাজার ৮৮৩ জনের ভ্রাম্যমাণ টিম রয়েছে। এছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স ও অন্যান্য দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশের ২৯ হাজার ২২০ সদস্য। অন্যদিকে র্যাবের দুহাজার ৬৪৮ ও আনসারের এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৪ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে ৪০০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। আর বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন ১৩৯ জন।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৫৫৬ কেন্দ্রের ৮১ হাজার ৮০৪ ভোট কক্ষে তিন কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১০২ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ এক কোটি ৬০ লাখ ২ হাজার ২২৪, নারী এক কোটি ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ এবং ১৮৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। স্থানীয় সরকারের ভোট হওয়ায় মন্ত্রী ও এমপিদের প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশনও নিয়েছি।’
আপনার মতামত লিখুন :