ঢাকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির, শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু

বার্তাজগৎ২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৪

যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির, শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু

কোটাবিরোধী আন্দোলনে গরম মাঠে সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করতে চায় বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করে মাঠে নামতে শরিকদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছেন দলটির নেতারা। এই আন্দোলনে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদেরও পাশে পেতে আগ্রহী দলটি। বিএনপির সূত্রে এসব জানা গেছে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে ‘অসম’ চুক্তি, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে মানুষ ক্ষুব্ধ। এর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনেও জনগণের সমর্থন আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও পেনশন স্কিমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন। সব মিলিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলনের এখনই সময়। তাই যত দ্রুত সম্ভব যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামার তাগিদ উঠেছে দলে। দলের নীতিনির্ধারকেরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার থেকে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে লিয়াজোঁ কমিটি। কমিটি গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত সাতটি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আজ শনিবারও কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক হবে। এসব বৈঠকে কর্মসূচির বিষয়ে শরিকদের মতামত নিচ্ছে বিএনপি।

জানতে চাইলে গতকাল যুগপৎ আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু বলেন, ‘সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। এই আলোচনা শেষ হলে সবার মতামত নিয়ে আমরা নিজেরা পর্যালোচনা করব। এরপর কর্মসূচি ঠিক করা হবে।’

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, আরও আগেই যুগপৎ আন্দোলনে নামার কথা ছিল। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি পালনসহ বিভিন্ন কারণে কর্মসূচি দিতে বিলম্ব হয়েছে। একই সঙ্গে প্রস্তুতির বিষয় আছে, শরিকদের মতামত নিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে একটু গোছানোভাবে মাঠে নামার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে আজ দলের যুগ্ম মহাসচিবদের সঙ্গে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বসার কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে কী বিষয়ে হবে, তা জানি না।’ তিনি বলেন, এখন থেকে যুগপৎ আন্দোলনই হবে। চলতি সপ্তাহ থেকে কর্মসূচি নিয়ে সেই আন্দোলন মাঠে গড়াতে পারে।

সমমনা ও শরিকদের নিয়ে সরকারবিরোধী এই আন্দোলনে বিএনপি কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদেরও পাশে পাওয়ার আশা করছে। তারা যেমন কোটার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন, তেমনি তারাও চান, শিক্ষার্থীরাও বিএনপির আন্দোলনে সমর্থন দেবেন। গতকাল রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্রতি একটু অনুরোধ করব, তারা যেভাবে কোটার জন্য লড়াই করছে, তাদের ভোটের জন্য এভাবে লড়াই করতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য এভাবে লড়াই করতে হবে।’

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এক দফার আন্দোলন চলমান থাকার দাবি করলেও গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মাঠে কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। যুগপৎ আন্দোলনও দেখা যায়নি। নির্বাচনের পর বিএনপি, তাদের সমমনা বিভিন্ন দল ও জোট নিজেদের মতো কিছু কর্মসূচি পালন করলেও মাঠে প্রভাব ফেলেনি।

বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করলেও শরিকদের কারও কারও কাছে দলটির মনোভাব স্পষ্ট নয়। আলোচনায় বসে তারা বিএনপির মনোভাব বুঝতে চাইছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে আন্দোলনকে গতিময় করতে চায় কি না, সেটা আমাদের বুঝতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ তো তৈরি। কিন্তু আমাদের নিজেদেরও তো তৈরি হতে হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লিয়াজোঁ কমিটির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতা। তাঁরা বলেন, লিয়াজোঁ কমিটির আলোচনায় অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কখনো কখনো কর্মসূচি ঠিক করার ক্ষেত্রে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। অন্য কোথাও থেকে আসা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়। এ থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসতে হবে।

বার্তাজগৎ২৪

Link copied!