ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশের সম্পদ মুসলমানদের মধ্যে বিলি করে দেবে। পারিবারিক সোনা-রুপার সঙ্গে বিবাহিত নারীদের গলায় পরা পবিত্র মঙ্গলসূত্র পর্যন্ত তারা কেড়ে নিয়ে বাঁটোয়ারা করে দেবে। তার এই মন্তব্যকে ইসলামোফোবিয়া হিসেবে দেখছেন উদারপন্থিরা। বিরোধীরা বলছেন, দেশের বহু সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতেই এইভাবে বিভেদের রাজনীতি ছড়াতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
রোববার (২২ এপ্রিল) রাজস্থান রাজ্যে এক নির্বাচনি জনসভায় মোদি বলেন, মা-বোনদের সোনার গহনা কেড়ে নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেয় কংগ্রেস! ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদন বলছে; মূলত ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আক্রমণ শানান মোদি। রোববার রাজস্থানের একটি সভায় গিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারে থাকাকালীন কংগ্রেস বলেছিল দেশের সম্পদের ওপর মুসলিমদের অধিকার সবার আগে। অর্থাৎ দেশের সম্পদ বণ্টন করা হবে তাদের মধ্যে, যাদের পরিবারে বেশি সন্তান রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে দেশের সম্পদ। কংগ্রেসের ইশতেহারেই বলা হয়েছে, মা-বোনদের সোনার গহনার হিসাব করে সেই সম্পদ বিতরণ করা হবে। মনমোহন সিংয়ের সরকার তো বলেই দিয়েছে, দেশের সম্পদে অধিকার মুসলিমদেরই। আপনাদের মঙ্গল সূত্রটাও বাদ দেবে না।’
সিএনএনের প্রতিবেদন মতে, ওই মন্তব্যে মোদি মুসলিম শব্দটি সরাসরি উল্লেখ করেন। এছাড়াও ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও ‘যারা অনেক সন্তান জন্ম দেয়’ এমন দুটি শব্দ ও শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন তিনি। এই দুটি শব্দ দিয়ে বিজেপির নেতারা সাধারণত মুসলিম সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে থাকেন।
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র নিন্দা শুরু করেছে কংগ্রেস। এক্স হ্যান্ডেলে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রথম দফার ভোট শেষ হতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন মোদি। সেই জন্যই মিথ্যা কথা বলে আমজনতার নজর ঘোরাতে চাইছেন। কিন্তু দেশের মানুষ সব সমস্যার কথা মাথায় রেখেই ভোট দেবেন।’
মোদিকে তোপ দেগেছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও। তার কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী বলেছেন। আসলে ২০০২ সাল থেকে মুসলিমদের নির্যাতন করেই ভোট পেয়ে আসছেন মোদি। তার জমানায় সব সম্পদ গিয়েছে ধনকুবের বন্ধুদের হাতে।’
আপনার মতামত লিখুন :